by newsside24_01 | সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫ ৬:০৫ অপরাহ্ণ
বরিশালঃ জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ ভূমিদস্যু মামুন মল্লিক গ্যাং কর্তৃক প্রাণহানির আশঙ্কায় প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার চেয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বরিশাল উজিরপুর উপজেলার ইচলাদী গ্রামের বাসিন্দা মৃত. ইসমাইল মল্লিকের ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেন মল্লিক দুলাল (৫৬)। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পৈতৃক সম্পত্তি ও ক্রয়কৃত জমি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনকারীর সাথে প্রায় দুই বছর ধরে পার্শ্ববর্তী মাদারশি গ্রামের বাসিন্দা মৃত হালিম মল্লিকের ছেলে-মেয়ে সহ পরিবারের সদস্যদের সাথে বিরোধ চলে আসছে। তার প্রতিপক্ষ হলেন- মো. আল মামুন মল্লিক ও তার ভাই আলামিন মল্লিক এবং আল মাহামুদ এবং বোন জিন্নাতুল নেছা উর্মি, খালেদা আক্তার ও শামিমা আক্তার সহ তাদের মা আলেয়া বেগম।
লিখিত বক্তব্যে দেলােয়ার হোসেন মল্লিক বলেন, উজিরপুর উপজেলাধীন ৮৯ নং ইসলাদী মৌজার এসএ ১৫৯ নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় সোনাবান তার সকল জমি গত ২৭/০৭/১৯৮৬ তারিখে তার পুত্র হালিম মল্লিককে ২ একর ৩৪ শতাংশ জমি ২৪৬২/৮৬ নং দলিলমূলে হস্তান্তর করেন। তবে তিনি তার জমির তুলনায় অতিরিক্ত ৩৩ শতাংশ বেশি জমি দলিলে দেন। পরবর্তীতে প্রতিপক্ষ মামুন মল্লিকের পিতা হালিম মল্লিক উপরোক্ত ২৪৬২ নং দলিলমূলে মালিক থেকে গত ২১/০৪/৮৮ তারিখে ১১৪০ নং দলিলে ১ একর ১৭ শতাংশ ও গত ২৭/০২/১৯৯০ তারিখে ৮৫৯ নং দলিলমূলে ৯৭ শতাংশ এবং গত ২২/০৩/২০০৯ তারিখে ৮৩২ নং দলিলে ২.৫০ (আড়াই) শতাংশ একুনে ২ একর সাড়ে ১৬ শতাংশ দেলোয়ার হোসেন দুলাল ও নাসরিন সুলতানা ও মরিয়ম বেগম এবং দুধ মেহের বিবির কাছে জমি বিক্রি করেন এবং রেকর্ডীয় এসমাইল মল্লিকের নিজ রেকর্ডীয় ৬৫ শতাংশ জমি পৈতৃক ওয়ারিশ সূত্রে মালিক আমি সহ আমার ৩ বোন।
অপরদিকে ৮৯ নং ইসলাদী মৌজায় সিএস ৮৯ তথা আরএস ২৬৩, এসএ ১৫৯ নং। সিএস খতিয়ানে রেকর্ডীয় বছির উদ্দিন ৮ আনা অংশের মালিক থাকিয়া তার মৃত্যুতে ১ পুত্র সেকেন্দার আলী (অবিবাহিত মৃত) ও ১ কন্যা সোনাবান বিবি ও ১ স্ত্রী নবাবজান বিবি। উক্ত সেকান্দার আলী (অবিবাহিত) মৃত্যুবরণ করিলে ওয়ারিশ থাকেন- ১ মাতা নবাবজান বিবি ও ১ বোন সোনাবান বিবি। উল্লিখিত নবাবজান বিবি তার স্বামীর স্বত্ব ও মৃত পুত্রের প্রাপ্ত অংশ থেকে গত ২৭/১২/১৯৪৮ তারিখে তিনি আমার পিতা ইসমাইল মল্লিকের নিকট ৩৮২৭/৪৮ নং হেবানামা দলিলমূলে ১ একর ৫৪ শতাংশ জমি হস্তান্তর করেন।
উক্ত দলিলমূলে আমার পিতার নামে এসএ রেকর্ড না হয়ে এসএ ১৫৯ নং খতিয়ানে ভুলবশত রেকর্ডীয় মালিক আফছের ওরফে আজাহার আলী, ধলু মল্লিক ও সোনাবান বিবির নামে রেকর্ড হয়। এই ভুল রেকর্ডের কারণে আমার পিতা ইসমাইল মল্লিক বাদী হয়ে মোকাম বরিশাল ১ম মুন্সেফী আদালতে দেওয়ানী ২১১/১৯৫৭ নং মামলা দায়ের করেন। তৎকালীন বিজ্ঞ আদালত গত ২৩/০২/১৯৫৯ ইং তারিখে দোতরফা সোলে সূত্রে ৯৫ শতাংশ জমি আমার পিতা এসমাইল মল্লিক প্রাপ্ত হন। উক্ত জমি পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে আমরা দাবিদার।
এসএ ১৫৯ নং খতিয়ানে সোনাবানের প্রাপ্ত হালট বাদে ১ একর ৯৭ শতাংশ জমি। কিন্তু আমাদের ভুল বুঝিয়ে ২ একর ১৬.৫০ শতাংশ জমি দলিল দেয় প্রতিপক্ষ মামুনের পিতা হালিম মল্লিক। প্রতিপক্ষের পূর্ববর্তী ওয়ারিশদের হতে আমাদের ক্রয়কৃত জমি ৩৮২৭/৪৮ নং দলিলে ১ একর ৫৪ শতাংশ জমি, ১১৪০/৮৮ নং দলিলে ১ একর ১৭ শতাংশ, ৮৫৯/৯০ নং দলিলে ৯৭ শতাংশ ও ৮৩২/০৯ নং দলিলে ২.৫০ (আড়াই) শতাংশ একুনে ৩ একর ৭০.৫০ শতাংশ এবং আমার পিতার নিজ নামে ৬৫ শতাংশ জমি। অত্র এসএ ১৫৯ নং খতিয়ানে মোট প্রাপ্ত ভূমি ৪ একর ৩৫.৫০ শতাংশ জমির মালিক থাকিয়া নামজারি করে দাবিদার খাজনা পরিশোধ করে বর্তমান মাঠ জরিপে রেকর্ড সংশোধন পূর্বক আমরা ভোগ দখলে রয়েছি।
প্রতিপক্ষ মামুন মল্লিক গং এবং জমির দালাল রতন রায় চৌধুরি তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে জাল জালিয়াতির কাগজ পত্রের মাধ্যমে অতি গোপনে তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদালত-কে ভুল তথ্য উপস্থাপনা করে ৩০০০(।) /২০২২-২৩ নং নামজারি করে রাখেন। আমি খাজনা দিতে গেলে জানিতে পারি প্রতিপক্ষের নামে একটি নামজারি নোট করা রয়েছে। পরবর্তীতে আমি উক্ত নামজারির বিরুদ্ধে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদালতে ১৫০ ধারার বিধানমতে মিস কেস ১১৬/২০২৩-২৪ নং মামলা দায়ের করিলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদালত উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করিলে প্রতিপক্ষের নামজারি ভুয়া প্রতীয়মান হয় এবং ৩০/০৭/২০২৪ তারিখে প্রতিপক্ষের কোন জমি না থাকায় নামজারি বাতিল হয়ে যায়। পরে প্রতিপক্ষ ক্ষিপ্ত হইয়া আমাদের নামজারির বিরুদ্ধে মিস কেস ১৫১/২০২৩-২৪ নং দায়ের করেন। সেই মামলাও আমরা রায় প্রাপ্ত হই। উক্ত রায়ে উল্লেখ আছে, সরকারি অধিগ্রহণকৃত জমি বাদ দিয়ে অনলাইন নামজারি নেওয়ার আদেশ দেন। এরপরে পুনরায় আবারও হয়রানি করার উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষ মামুন গং ৩০/২০২৪-২৫ নং মিস কেস দায়ের করিলে উক্ত কেসে আমরা রায় প্রাপ্ত হই। এবং ৬৮/৮৭ নং দেওয়ানী মোকদ্দমায় তৎকালীন তর্কিত দলিল বাতিল হয় এবং ২৪৬২/৮৬ নং দলিল বহাল থাকে।
এদিকে, সোনাবান এবং হালিম মল্লিক মিলে আমাকে দলিল দেওয়ার কথা বলে টাকা নেয়। আমার অনুপস্থিতে হালিম মল্লিক প্রতারণাপূর্বক তার নামে সোনাবান হইতে ২৪৬২/৮৬ নং দলিল করে নেয়। তখন আমি গ্রামে ছিলাম না। পরে মিস কেস ১৫১/২০২৩-২৪ নং মামলার আদেশ মোতাবেক নামজারির আবেদন করিলে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী প্রকৃতির বিভিন্ন লোকজন নিয়ে আমাকে সহ আমার পরিবারকে পথে ঘাটে খুন জখমের হুমকি দেয় এবং অত্র অফিস কর্মচারীদের প্রতিপক্ষ গং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এভাবে একাধিকবার নামজারির আবেদন করলেও প্রতিপক্ষ মামুন মল্লিক গং ও রতন রায় চৌধুরি তার সাঙ্গপাঙ্গদের ভয়ে নামজারির আদেশ দিতে গড়িমসি করেন সহকারী কমিশনার ভূমি। এমনকি বিগত ইং ০৪/১২/২০২৪ তারিখে আমি ও আমার ছেলে ও বোন মরিয়ম এবং রুনু বেগমকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষ মামুন গং উজিরপুর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের ভিতরে বিচার কার্যক্রম চলাকালীন সময় আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনার আমি উজিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি দায়ের করি। যার নন জিআর নং- ০৩/২০২৫ বিচারাধীন রয়েছে। প্রতিপক্ষ মামুনের ভাই আল মাহামুদের নামে একাধিক মামলা থাকার পরও দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে গেছে।
সর্বশেষ প্রতিপক্ষ গং গত ১৮/০৯/২০২৫ তারিখ অনুমান বিকাল ৩ টার সময় আমার নামজারির প্রতিবেদন দেওয়ার কারণে উজিরপুর উপজেলার সার্ভেয়ার অফিসারকে হুমকি প্রদর্শন করে। সংবাদ পেয়ে যাবার পথে মামুন গং আমার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। এমনকি জাল জালিয়াতির ওয়ারিশ সনদ সৃজন করে দাবি মূলক অপরের সম্পত্তি রেকর্ড করার পাঁয়তারা করে। এলাকায় এমন অনেক ঘটনা প্রতিপক্ষ মামুন মল্লিক গংদের বিরুদ্ধে রয়েছে।
মিউটেশন ৭২০/১৯৮৬-৮৭ নং নামজারিটি দেওয়ানী ৬৮/১৯৮৭ নং মোকদ্দমার বলে তখন বাতিল হয়। আমি জমিজমা সম্পর্কে অবুঝ হওয়ায় উক্ত নামজারিটি খতিয়ানে নোট করিতে সক্ষম হয়নি। মিস কেস ১৫১/২০২৩-২৪ এর সংশোধনী মিস কেস ৩০/২০২৪-২৫ নং মোকদ্দমায় যাহা ৭২০/১৯৮৬-৮৭ নং নামজারি বাতিল হয় এবং ১৫১/২০২৩-২৪ মিস কেস ১৯/১১/২০২৪ ইং তারিখের শেষ আদেশে উল্লেখ আছে আমাদের দলিলকৃত জমি এবং পৈতৃক ওয়ারিশ জমি ও দেওয়ানী ২১১/নামজারি আফছের ওরফে আজাহার জমি সোলে সূত্রে ইসমাইল মল্লিক প্রাপ্ত হয়। সেই মোতাবেক অনলাইনে নামজারি আবেদন করিলে তহশিলদার সাহেব ও সার্ভেয়ার সাহেবসহ সকল অফিসারগণ কাগজ পর্যালোচনা করে আমার নামজারির প্রতিবেদন দাখিল করে। কিন্তু প্রতিপক্ষ ভূমি অফিসের আদেশ এবং তদন্ত প্রতিবেদনের আদেশ উপেক্ষা করে মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করে গত ২১/০৯/২০২৫ তারিখে উজিরপুরে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। যা স্থানীয় একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়।
Source URL: https://newsside24.com/?p=2108
Copyright ©2025 News Side24.com unless otherwise noted.