TT Ads
Spread the love

বরিশাল: বরিশালে বিশ্ব পানি সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষ্যে বরিশালে পথসভা করেছে বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা। এবারের প্রতিপাদ্য ছিলো “উপকূল বাঁচাতে পানি বাঁচান”।

 

প্রান্তজন ও পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (প্রাণ) এর আয়োজনে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে নগরের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে নগরে র‍্যালি বের করা হয়, যা নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে অশ্বিনী কুমার হল প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। র‌্যালিতে হাতে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানারে লিখে “পানি নেই, জীবন নেই” “উপকূল বাঁচাতে পানি বাঁচান” “ভূগর্ভস্থ পানি রক্ষা করুন” বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

 

পথসভায় বক্তারা বলেন, বরিশালের উপকূলীয় মানুষের জন্য পানিসংকট আর নতুন কিছু নয়। ভূগর্ভস্থ পানি দ্রুত হ্রাস, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, খরা ও নদীভাঙন এই অঞ্চলের জীবিকা ও স্বাস্থ্যকে প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে ফেলছে। বক্তারা বলেন, “পানি কেবল জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার নয় বরং এর সমাধানেরও হাতিয়ার।”

 

পথসভায় বরিশাল পরিবেশ ও জনসুরক্ষা ফোরামের আহ্বায়ক শুভংকর চক্রবর্তী বলেন, “বরিশালে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতি বছর গড়ে ১.৫ থেকে ২ মিটার কমছে। এভাবে চলতে থাকলে ১০ বছরের মধ্যে মানুষকে নিরাপদ পানির জন্য হাহাকার করতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, উপকূলের প্রায় ৪৫ শতাংশ গ্রাম লবণাক্ত পানির ঝুঁকিতে। এটি কৃষি, মৎস্যচাষ, এমনকি নারীর স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।

 

পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরাম বরিশালের আহ্বায়ক সুভাষ দাস বলেন, “জলাধার, খাল খনন ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে সরকারি প্রকল্প হাতে নিতে হবে। একই সঙ্গে জনগণকেও পরিবার ও মহল্লা পর্যায়ে পানি সাশ্রয়ে উদ্যোগী হতে হবে। প্রান্তজনের নির্বাহী পরিচালক মো. তৌহিদুল ইসলাম শাহাজাদা বলেন, এই র‍্যালি ও সভা কেবল সচেতনতার কর্মসূচি নয়, বরং নীতিনির্ধারকদের কাছে দাবি পেশ করার একটি প্ল্যাটফর্ম। সরকার ও জনগণ একসাথে কাজ না করলে পানির নিরাপত্তা আসবে না।

 

আরোহির নির্বাহী পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, বরিশালে পানিসংকট শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং মানবসৃষ্ট ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতাও বড় কারণ। খাল-জলাশয় দখল ও ভরাট হওয়ায় পানি জমে না, আবার বর্ষায় হঠাৎ বন্যা আঘাত হানে। ফলে একদিকে খরায় পানি সংকট, অন্যদিকে বর্ষায় জলাবদ্ধতার দ্বৈত সংকটে ভুগছে মানুষ। পানি রক্ষা ছাড়া জলবায়ু অভিযোজন সম্ভব নয়। পানি বাঁচানো মানে জীবন বাঁচানো, আর জীবন বাঁচানো মানেই উপকূল রক্ষা।”

 

স্থানীয় কৃষক মো. মান্না নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “আগে ফসল ফলত প্রচুর, এখন লবণাক্ততায় জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানির অভাবে সেচ দেওয়া যায় না। সরকার ও এনজিওরা যদি সাহায্য করে, তাহলে আমরা আবার চাষাবাদে টিকে থাকতে পারব।” শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বলেন, “আমাদের প্রজন্মকে পানি সংকটের ভেতর বড় হতে হবে না। বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পানি সাশ্রয় আন্দোলন শুরু করা জরুরি।”

 

আরোহির নির্বাহী পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, বরিশালে পানিসংকট শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং মানবসৃষ্ট ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতাও বড় কারণ। খাল-জলাশয় দখল ও ভরাট হওয়ায় পানি জমে না, আবার বর্ষায় হঠাৎ বন্যা আঘাত হানে। ফলে একদিকে খরায় পানি সংকট, অন্যদিকে বর্ষায় জলাবদ্ধতার দ্বৈত সংকটে ভুগছে মানুষ। পানি রক্ষা ছাড়া জলবায়ু অভিযোজন সম্ভব নয়। পানি বাঁচানো মানে জীবন বাঁচানো, আর জীবন বাঁচানো মানেই উপকূল রক্ষা।

 

র‍্যালি ও পথসভায় স্থানীয় স্কুলকলেজের শিক্ষার্থী, এনজিও কর্মী, নারী সংগঠনের সদস্য, কৃষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেয় ।

Print this entry

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *