কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ইউপির সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও সরকারি সুবিধা প্রদানের নামে জনগনের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার(৩০ অক্টোবর) দুপুরে ধানখালী ইউনিয়নের ছৈলা বুনিয়া গ্রামের আনন্দবাজার সড়কে ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে এ মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় মো.শাহীন, জামাল মিয়া, মো.রাজ, স্বর্ণমণি ও রোজিনা বেগমসহ ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন,ইউপি সদস্য আবুল হোসেন নির্বাচিত হওয়ার পর সরকারি ঘর, টয়লেট,বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, জন্ম নিবন্ধন, ভিজিডি, ভিজিএফ ও ১৫ টাকা দরের চালের কার্ড প্রদানসহ সরকারি বিভিন্ন সুবিধা প্রদানের জনসাধারণের কাছ থেকে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রশাসনের কাছে এই দুর্নীতিবাজ সদস্যের বিচারের দাবি ও অর্থ আত্মসাধের টাকা ফেরত চায়।

Print this entry

 

উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলায় সন্ধ্যা নদীতে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা দেখতে ছিলো লক্ষ জনতার ঢল।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকাল ৩ টার সময় সন্ধ্যা নদীর শিকারপুর সরকারী শেরে- বাংলা ডিগ্রি কলেজের সামনে থেকে শুরু করে মেজর এম,এ জলিল সেতু পর্যন্ত নৌকা বাইচ এসে শেষ হয়। ৬ টি নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী সুজার সভাপতিত্বে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করেন প্রধান অতিথি হিসেবেনবরিশাল জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশালের পুলিশ সুপার মোঃ শরীফ উদ্দিন ও জাতীয় জাদুঘরের জনশক্তি বিভাগের কিপার আসমা ফেরদৌসী।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি কর্মকর্তা মহেশ্বর মন্ডল উজিরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম খান, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম আলাউদ্দিন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রোকনুজ্জামান টুলু, উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস সালাম প্রমুখ।

নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করার জন্য নদীর দুই পাশে ও নদীতে বিভিন্ন সাঝে সজ্জিত ছিলো ট্রলার ও নৌকা। এছাড়া নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা লক্ষ জনতা উপভোগ করে।

Print this entry

 

বরিশাল: বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্র যখনই সংকটে পড়েছে, তখনই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বই বাংলাদেশকে মুক্তির পথে নিয়ে এসেছে। খালেদা জিয়ার আপোষহীনতার কারণেই দেশে বারবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৩ টায় বরিশাল নগরীর গির্জা মহল্লা এ.কে স্কুলের মাঠে বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি এবং পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনায় নিজ উদ্যোগে সদর আসনের সকল নারী সমাজকে নিয়ে এক সমাবেশ ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় রহমাতুল্লাহ আরও বলেন, ১৯৮৬ সালের পাতানো নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত স্বৈরাচার এরশাদের ক্ষমতা বৈধ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার দৃঢ় ও আপোষহীন অবস্থানের কারণেই সেই অবৈধ সংসদ টিকতে পারেনি। “ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা বারবার খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি আপোষ করেননি। তাঁর আপোষহীন অবস্থানের কারণেই তাঁকে কারাগারে যেতে হয়েছিল। অথচ কারাগার থেকেও তিনি গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলনরত জনগণকে অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন। স্বৈরাচারের ষড়যন্ত্রে পা না দেওয়ায় বেগম জিয়াকে এক কাপড়ে বাড়ি ছাড়া করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্যাতনও তাঁর আদর্শকে পরাজিত করতে পারেনি।
নারীদের উদ্দেশে রহমাতুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের নারী জাগরণের ইতিহাসে বেগম খালেদা জিয়া এক অনন্য নাম। তিনি শুধু রাজনীতির মাঠে নয়, নারী নেতৃত্বের শক্তি হিসেবেও এক অপ্রতিরোধ্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন। বেগম জিয়া নারীদের শিখিয়েছেন কিভাবে সাহসী হতে হয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়, নিজের অধিকার আদায় করতে হয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, যিনি প্রমাণ করেছেন নেতৃত্বের প্রশ্নে নারী পুরুষের কোনো পার্থক্য নেই। এসময় সমাবেশে বেগম জিয়ার সুস্থ্যতা কামনা করে সকলের কাছে দোয়া চান রহমাতুল্লাহ। সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের হাজার হাজার নারী নেত্রীরা অংশ নেন। তারা বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ্যতা কামনা করে দোয়া মোনাজাত ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান।
কর্মসূচিতে আবু নাসের মোঃ রহমাতুল্লাহর সহধর্মীনি সাবেক নারী নেত্রী রাফিয়া বেগম, জেলা মহিলাদলের সভাপতি ফাতেমা রহমান ও মহানগর মহিলা দল নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

Print this entry

 

বিশেষ প্রতিনিধি:  ঢাকা–মুন্সিগঞ্জ রুটে ‘পি এস মাহসুদ’-এর পরীক্ষামূলক যাত্রায় অংশ নিয়ে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে ঢাকা- বরিশাল নৌরুটে চালু হতে যাচ্ছে প্যাডেল ষ্টিমার। এ উপলক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের শুক্রবার ঢাকার সদর ঘাটে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ঢাকা- বরিশাল নৌরুটে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদ। এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও নদীভিত্তিক পর্যটনের এক অনন্য মেলবন্ধন হতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)-এর শতবর্ষী ঐতিহ্যের এ স্টিমারকে ঢাকা–বরিশাল নৌরুটে আগামী মাস থেকে নদীকেন্দ্রিক পর্যটন সার্ভিসে যুক্ত করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন সংরক্ষণের পর আধুনিক সুবিধা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন রূপে নদীপথে ফিরছে এ ঐতিহ্যবাহী জলযান।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর সদরঘাট থেকে ঢাকা–মুন্সিগঞ্জ রুটে ‘পি এস মাহসুদ’-এর পরীক্ষামূলক যাত্রায় অংশ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “স্টিমারটি এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আজকের ট্রায়াল ট্রিপের মাধ্যমে যান্ত্রিক ও নেভিগেশন সক্ষমতা যাচাই করা হচ্ছে। আগামী ১৫ নভেম্বর জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে ঢাকা – বরিশাল নৌরুটে পিএস মাহসুদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। এরপর এটি নিয়মিত পর্যটন সার্ভিস হিসেবে চলাচল শুরু করবে।

তিনি আরও বলেন, “পি এস মাহসুদ কেবল একটি নৌযান নয়, এটি বাংলাদেশের নদীজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম কাছ থেকে দেখুক, কীভাবে একসময় নদীপথই ছিল যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ।”

উপদেষ্টা জানান, ‘পি এস মাহসুদ’-এর পাশাপাশি পি.এস অস্ট্রিচ, পি.এস লেপচা ও পি.এস টার্নসহ আরও কয়েকটি পুরনো স্টিমার সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য হলো— নদীপথের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও নদীভিত্তিক পর্যটনের সম্ভাবনাকে বিস্তৃত করা।

তিনি বলেন, “একসময় নদী ছিল বাঙালির জীবনরেখা। আমরা চাই মানুষ আবার নদীর সঙ্গে সেই সম্পর্ক নতুনভাবে আবিষ্কার করুক। ‘পি এস মাহসুদ’ সেই সম্পর্কেরই প্রতীক হয়ে ফিরছে— এটি চলমান ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি।”

স্টিমারটির সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় মূল কাঠামো ও ঐতিহাসিক নকশা অক্ষুণ্ণ রেখে ইঞ্জিন, নিরাপত্তা ও ফায়ার সেফটি সিস্টেম সম্পূর্ণ নবায়ন করা হয়েছে। এতে রয়েছে আধুনিক কেবিন, পর্যটক-বান্ধব ডেক এবং ডিজিটাল নেভিগেশন ব্যবস্থা।

স্টিমারটি প্রতি শুক্রবার ঢাকা থেকে বরিশাল এবং শনিবার বরিশাল থেকে ঢাকা রুটে চলবে। যাত্রীরা উপভোগ করতে পারবেন নদীর সৌন্দর্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক অনন্য ভ্রমণ অভিজ্ঞতা।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে এতে সংযোজন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা সরঞ্জাম, লাইফ বোট, ফায়ার সেফটি ও জিপিএস ব্যবস্থা। ইঞ্জিনে ব্যবহৃত হয়েছে কম ধোঁয়া নির্গমনকারী প্রযুক্তি, যা নদীপথে দূষণ হ্রাসে সহায়ক হবে। স্টিমার পরিচালনায় থাকবেন ২৫ জন প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা ও নাবিক।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব( রুটিন দায়িত্ব) দেলোয়ারা বেগম , বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান মোঃ সলিম উল্লাহসহ মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর–সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Print this entry

 

প্রতিবেদক: দেশে অসংক্রামক রোগের অন্যতম ঝুঁকি সৃষ্টিকারী উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে কমানো সম্ভব। সরকার ইতোমধ্যে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ শুরু করলেও, টেকসই অর্থায়নের ঘাটতি নিয়মিত ওযুধ সরবরাহে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। ২২ অক্টোবর বুধবার অনলাইনে আয়োজিত “বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: অগ্রগতি, বাধা এবং করণীয়” শীর্ষক এক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব তথ্য ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) কর্মশালাটির আয়োজন করে। কর্মশালায় বরিশাল বিভাগে কর্মরত প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়ার ২৩জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উচ্চ রক্তচাপ বিষয়ক প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে সারা বিশ্বে ১৪০ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে এবং কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে ২০৩০ সালের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান তিনটি কারণের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ অন্যতম এবং বর্তমানে এ রোগে ভুগছে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন। তৃণমূল পর্যায়ে বিনামূল্যে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ নিশ্চিত করার পাশাপাশি এখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হলে এটি অসংক্রামক রোগ ও অকালমৃত্যু কমিয়ে আনতে ব্যয়-সাশ্রয়ী পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।

কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। কর্মশালায় বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা।

Print this entry

 

বরিশালঃ উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি-২০২৫) পরীক্ষায় বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৬২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৬৭ জন শিক্ষার্থী। গতবছরের থেকে এ বছরে পাশের হার ও জিপিএ-৫ এর দিক থেকে এবারে বরিশাল বোর্ডের ফলাফল অনেকটা খারাপ হয়েছে।

গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিল চার হাজার ১৬৭ জন শিক্ষার্থী।

বৃহষ্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০ টার দিকে ফলাফলের পরিসংখ্যান ঘোষণা করেন বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী।

তিনি জানান, এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৫৯ হাজার ২৩৯ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ২৭ হাজার ৮৩৭ জন ও ছাত্রী ৩১ হাজার ৪০২ জন। পাস করেছে ৩৭ হাজার ৬৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৪ হাজার ৬৪২ জন ও ছাত্রী ২২ হাজার ৪২৪ জন।
বিভাগে পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে বরিশাল জেলা। প্রতিবারের মতো এবারও এ শিক্ষা বোর্ডে ফলাফলে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা পাস ও জিপিএ’র হারে এগিয়ে। গত বছর বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৬৫। আর এবা‌র জিপিএ-৫ বেড়েছে ১৭৪টি।

এ বছর ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেমন কেউ পাশ করেনি, তেমনি শতভাগ পাশ করেছে দুটি প্রতিষ্ঠান। এদিকে বরিশাল বোর্ডের ১২ প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি, দুটিতে শতভাগ পাশ।

বোর্ডের ৩৪৯টি কলেজের ৩৭ হাজার ৬৬ শিক্ষার্থীরা ১৪৪টি কেন্দ্রে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে ১২টি কলেজের কোন পরীক্ষার্থী পাস করেনি। আর মাত্র দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই অর্থাৎ শতভাগ পাস করেছেন।

যে ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ পাশ করেনি তারমধ্যে বরগুনার ১ টি, ভোলার ৪ টি, বরিশাল জেলায় তিনটি, ঝালকাঠির দুটি ও পটুয়াখালী জেলায় দুটি কলেজে রয়েছে। যারমধ্যে রয়েছে বরগুনার বামনার সরকারি সারওয়ারজান পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বরিশাল সদরের কমার্স কলেজ, বাবুগঞ্জের মোহনগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মেহেন্দিগঞ্জের আন্ধারমানিক ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভোলার বোরহানউদ্দিনের দেলুয়া তালুকদার বাড়ি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লালমোহনের বালুরচর দালাল বাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভোলা সদরের ভাষা শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয় ও মেদুয়া কলেজ, ঝালকাঠির নলছিটির রাঙ্গাপাশা সেকেন্ডারি স্কুল ও কলেজ এবং আব্দুস সালাম কলেজ, পটুয়াখালী সদরের আউলিয়াপুর সাবিনা আক্তার হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও দুমকি উপজেলার দুমকি নাছিমা কেয়ামত আলী মহিলা কলেজ।

এছাড়া ৫০ শতাংশের ওপরে পরীক্ষার্থী পাস করেছে ১৯৭টি কলেজে এবং ৫০ শতাংশের নিচে পরীক্ষার্থী পাস করেছে ১৩৮টি কলেজে। এর মধ্যে ২০ শতাংশের নিচে ছয়টি, ১৫ শতাংশের নিচে ছয়টি এবং ১০ শতাংশের নিচে দুটি কলেজের পরীক্ষার্থী পাস করেছেন।

এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে পাসের হারের দিক থেকে এবারে সবার শীর্ষে রয়েছে বরিশাল জেলা। আর সবার নীচের অবস্থানে রয়েছে বরগুনা জেলা।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ফলাফল সন্তোষজনক, গত বছর পাশের হার বেশি থাকলেও এবছর পাশের হার কম। তবে যারা নিয়মিত পড়াশুনা করেছে তারাই কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করেছে বলে জানা গেছে।

এ বছর গড় পাশের হারে বরিশাল জেলার অবস্থান রয়েছে সবার শীর্ষে। এ জেলায় মোট পাশের হার ৬৮ দশমিক ১৬ শতাংশ।

এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা পিরোজপুর জেলার পাশের হার ৬৪ দশমিক ৭৮। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভোলা জেলার পাশের হার ৬২ দশমিক ৯৮। চতুর্থ অবস্থানে থাকা ঝালকাঠি জেলার পাশের হার ৫৮ দশমিক ৬৪, যা গত বছর ছিল ৮৯ দশমিক ২৭। পঞ্চম অবস্থানে থাকা পটুয়াখালী জেলার পাশের হার ৫৭ দশমিক ৪৪ এবং ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা বরগুনা জেলার পাশের হার ৫১ দশমিক ৭৭।

অপরদিকে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাশের হার সব থেকে বেশি এরপর ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের অবস্থান। জিপিএ-৫ এর দিক থেকে সবচেয়ে বেশি পেয়েছে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা, এ বিভাগে মোট ৮০৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এছাড়া মানবিক বিভাগ থেকে ৭৭৭ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৯১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

উল্লেখ্য এ বছর ১৪৪টি কেন্দ্রে ৩৪৯ টি কলেজের ৬১ হাজার ৪৮১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশগ্রহণ করে ৫৯ হাজার ২৩৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৩৭ হাজার ৬৬ জন।

এছাড়া এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৪ জন মেয়ে ও ১৮ জন ছেলে পরীক্ষার্থীকে বিভিন্ন সময়ে অসদুপায় অবলম্বন করায় বহিষ্কার করা হয়েছে।

Print this entry

 

বরিশালঃ বাংলা কবিতার শুদ্ধতম নিঃসঙ্গ পাখি—কবি জীবনানন্দ দাশ। তাঁর জন্মভূমি বরিশালের নদী, বন, কুয়াশা, হিজল ও ধানসিঁড়ির তীরেই তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন কবিতার আত্মা।

আগামী ২২ অক্টোবর ২০২৫, কবির ৭১ তম মৃত্যুদিনে আগুনমুখা’র পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে দিনব্যাপী সাহিত্যভ্রমণ, কবিতা পাঠ ও সাংস্কৃতিক আসর। এই আয়োজনে কবি জীবনানন্দ দাশ’র সকল কবিতা প্রেমীদের আন্তরিকভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আগুনমুখা সম্পাদক নাজমুল শামীম। তিনি জানান, কবি জীবনানন্দ দাশ’র প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে

ভোরে কবির জন্মভিটায় শ্রদ্ধাঞ্জলি ও প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।
বেলা ১১ টায় ঝালকাঠীর ধানসিঁড়ি নদীর তীরে কবিতা পাঠ ও আড্ডা।

সন্ধ্যায় এবিসি ফাউন্ডেশন এর হলরুমে কবিতা পাঠ ও সমাপনী অনুষ্ঠান। উক্ত আয়োজনে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের কবি-সাহিত্যিকদের মিলনমেলায় আপন কণ্ঠে কবিতা পাঠ করা হবে।

Print this entry

 

কলাপাড়াঃ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় খুচরা সার বিক্রতাদের টিও লাইসেন্স প্রদান এবং সরকারি আইডি কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতাদের বহাল রাখার দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলার সার বিক্রেতারা।

বুধবার দুপুর ১২ টায় বাংলাদেশ খুচরা সার বিক্রেতা এসোসিয়েশন কলাপাড়া শাখার এ মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলন শেষে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন ব্যবসায়ীরা।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাওসার মিয়া বলেন, কলাপাড়ার ১২ টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ১৪ জন সার ডিলারের বাইরে সরকারি আইডি কার্ডধারী ১২৪ জন খুচরা সার বিক্রেতা রয়েছে। যারা উপজেলার প্রায় ৩৫ হাজার কৃষককে সার বিক্রি করছে। এ ১২৪ জন খুচরা বিক্রেতা না থাকলে কৃষকদের কৃষি মৌসুমে সার পেতে সীমাহীন দুর্ভোগ ও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হতো। কিন্তু বর্তমানে প্রতি ইউনিয়নে একজন ডিলার রেখে খুচরা সার বিক্রেতাদের বাদ দেয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে কলাপাড়ার খুচরা সার বিক্রেতারা এ আন্দোলনে নামে।

সংগঠনের সভাপতি শামিম মুন্সী বলেন, সারা দেশের ৪৪ হাজার খুচরা সার বিক্রেতাদের কাছ থেকে প্রায় ৫ কোটি কৃষক উপকৃত হচ্ছে। তাদের বিক্রি বন্ধ করতে পারলে সার সিন্ডিকেট চক্র আবার সক্রিয় হবে। এতে কৃষকরা কৃষি মৌসুমে সার সিন্ডিকেটের কাছে আবার জিম্মি হয়ে পড়বে। তাই অবিলম্বে সরকারি আইডি কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতাদের বহাল রাখার পাশাপাশি তাদের সার বিক্রির টিও লাইসেন্স প্রদানের দাবি জানান।

Print this entry

 

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঢাকায় শিক্ষকদের উপর পুলিশি হামলা ও ২০ ভাগ বাড়ি ভাড়া, ১৫ শত টাকা চিকিৎসা ভাতার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। মঙ্গলবার বেলা এগারোটায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন কলাপাড়া মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, কলাপাড়া কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, খেপুপাড়া নেছারউদ্দিন কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন হাওলাদার, কলাপাড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক নেছারউদ্দিন আহমেদ টিপু, মুক্তি যোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজের সহকারী অধ্যাপক চঞ্চল সাহা ও কলাপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, উপজেলা কলেজ শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান, নাওভাঙ্গা আলিম মাদ্রাসার প্রভাষক ইভান মাতুব্বর, নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন, বানাতিপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আবদুর রহমান জাফর এবং ধানখালী আশ্রাফ একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফেরদৌস মিয়া সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
মানববন্ধনে হাজারো শিক্ষকদের উপস্থিতিতে ঘন্টাব্যাপী বন্ধ থাকে ওই সড়কের যান চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারন মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তারা তাদের দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে লাগাতার কর্মবিরতি পালনের পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন না করার হুশিয়ারী দেন।

Print this entry

 

বরিশালঃ বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমির আলোচিত কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশগুপ্তকে হঠাৎ করে কুড়িগ্রামে বদলি করা হয়েছে। বিশ্বস্ত এক সূত্র জানায়, অনিয়ম দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা সহ নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ থাকায় গত সোমবার ( ১৩ই অক্টোবর) দিবাগত রাতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাসচিব মোঃ ওয়ারেছ হোসেন স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশে কালচার অফিসার অসিত বরণ দাশগুপ্তকে কুড়িগ্রামে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। তার বদলির খবর ছড়িয়ে পড়লে কীর্তনখোলার তীরের শিল্পী সমাজে একপ্রকার স্বস্তি নেমে আসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই খবরে শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে ‘হাফ ছেড়ে বাঁচার’ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অসিত বরণ দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে বরিশালে যোগদানের পর থেকেই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। ২০২৪ সালে সরকার পরিবর্তনের পর বরিশালে পদায়ন পাওয়া এই কর্মকর্তা শুরু থেকেই বিতর্কে জড়ান। চলতি বছরে ১২ ই জানুয়ারি বরিশাল শিল্পকলায় কালচার অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হয়ে অবৈধভাবে রেস্ট হাউজ দখল করেন যা তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রাথমিক পর্যায়। হল ভাড়া থেকে শুরু করে নামে-বেনামে একাধিক অনুষ্ঠান করে হরিরলুট করেন অসিত। যার ফলে বরিশাল শিল্পকলার ফান্ডের অর্থ শূন্যের পথে ধাবিত হয়। এছাড়াও গত ৩০শে জুন সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে অসিত। এতে একাডেমিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। প্রশিক্ষকদের অভিযোগ, বরিশালের সাবেক কালচারাল অফিসার হাসানুর রশীদ ১২ জন প্রশিক্ষকের ২০২৪-২৫ সালের চুক্তি নবায়নের প্রস্তুতি রেখে গিয়েছিলেন। কিন্তু অসিত বরণ দায়িত্ব নেয়ার পর চুক্তি নবায়ন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেন এবং নতুন প্রশিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেন। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের ১ জুলাই গণমাধ্যমকর্মী মুহম্মদ ইমন খন্দকার হৃদয় লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ওয়ারেছ হোসেন, বরিশালের জেলা প্রশাসক ও শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, এবং দুদকের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. এইচএম আক্তারুজ্জামানের বরাবর। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, অসিত বরণ দাশগুপ্ত ২০১৩ সালে কালচারাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই সিলেট, হবিগঞ্জ ও বরিশালসহ বিভিন্ন স্থানে অনিয়ম ও নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলেন। ২০১৬ সালে সিলেটে নারী ঘটিত একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, যা পরবর্তীতে গণমাধ্যমেও আলোচিত হয়। ২০২৪ সালে সিলেটে তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ হয়, এবং ২০২৫ সালে তাকে বরিশালে বদলি করা হয়। বরিশালে যোগদানের পর তিনি সরকারি রেস্ট হাউজে পরিবারসহ অবৈধভাবে বসবাস করে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেন। এছাড়া হলরুম ভাড়ার টাকা গোপন রেখে ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ এবং সাধারণ ফান্ড থেকে প্রায় ২৯ লাখ টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) উপমা ফারিসাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি গত ৮ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে এবং সূত্রমতে, প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরপরই কর্তৃপক্ষ তার বদলির সিদ্ধান্ত নেয়। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, “এটি এক ধরনের শাস্তিমূলক বদলি।” সূত্রটি আরও জানায়, সোমবার শিল্পকলা একাডেমি সারা দেশের অন্তত ১৯ জেলার কালচারাল অফিসারকে বদলির আদেশ দেয়। নির্দেশে বলা হয়, কর্মকর্তাগণকে আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে হবে, নতুবা ওইদিন থেকেই তারা অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন। বদলির বিষয়ে জানতে অসিত বরণ দাশগুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে জেলা প্রশাসনের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায় যে, অসিত বরণকে কুড়িগ্রামে বদলি এবং বরিশালে পটুয়াখালীর কর্মরত কালচার অফিসার তানবীর রহমানকে নতুন কালচারাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই পরিবর্তনে বরিশালের শিল্পী সমাজে স্বস্তি ও আশাবাদ লক্ষ্য করা গেছে। তারা জানান, অসিত বরণ বরিশালে যোগদানের পর থেকেই একাডেমিকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করতেন। রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের জন্য তিনি বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ান এবং ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে শিল্পীদের অর্থ আত্মসাৎ করেন। এই বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগকারী ও গণমাধ্যমকর্মী মুহম্মদ ইমন খন্দকার হৃদয় বলেন, “সত্যের জয় সবসময় হয়। অসিত চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ— সেটি প্রমাণিত হয়েছে। তাই সে বদলিমূলক শাস্তি পেয়েছে। কিন্তু সে যে লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি করেছে, তার বিচার এখনো হয়নি। অসিত সিলেটে চুরি করেছে, বরিশালেও করেছে  কুড়িগ্রামেও করবে। কর্তৃপক্ষের উচিত তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা।” তিনি আরও বলেন, “বরিশাল শিল্পকলা এই জেলার মানুষের আবেগের স্থান। এটাকে সুন্দর ও দুর্নীতিমুক্ত রাখা আমাদের দায়িত্ব। নতুন কর্মকর্তা যদি একই পথ অনুসরণ করেন, তবে তার বিরুদ্ধেও আমি লড়ব। আমি থাকতে বরিশাল শিল্পকলায় কোনো দুর্নীতি হতে দেবো না।”

Print this entry